বর্ণ
বিভিন্ন ধ্বনিকে লেখার সময় বা নির্দেশ করার সময় যে চিহ্ন ব্যবহার করা হয়, তাকে বর্ণ বলে।
প্রকারভেদ
বর্ণ দুইপ্রকার- স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ।
১. স্বরবর্ণ
স্বরধ্বনি নির্দেশ করার জন্য ব্যবহৃত বর্ণকে স্বরবর্ণ বলে।
২. ব্যঞ্জনবর্ণ
ব্যঞ্জনধ্বনি নির্দেশ করার জন্য ব্যবহৃত বর্ণকে ব্যঞ্জনবর্ণ বলে।
হসন্ত বা হলন্ত ধ্বনি : আমরা যখন ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণ করি, তখন তার শেষে একটি স্বরধ্বনি ‘অ’-ও উচ্চারণ করি। যেমন, ‘ক্’ কে উচ্চারণ করি (ক্ + অ =) ‘ক’। উচ্চারণের সুবিধার জন্য আমরা এই কাজ করি। কিন্তু স্বরধ্বনি ছাড়া ‘ক্’ উচ্চারণ করলে সেটা প্রকাশ করার জন্য ‘ক’-এর নিচে যে চিহ্ন (& )দেয়া হয়, তাকে বলে হস্ / হল চিহ্ন। আর যে ধ্বনির পরে এই চিহ্ন থাকে, তাকে বলে হসন্ত বা হলন্ত ধ্বনি। কোন বর্ণের নিচে এই চিহ্ন দেয়া হলে তাকে বলে হসন্ত বা হলন্ত বর্ণ।
বাংলা বর্ণমালা
বাংলা বর্ণমালায় বর্ণ আছে মোট ৫০টি। নিচে বর্ণমালা অন্যান্য তথ্য সহকারে দেয়া হলো-
পূর্ণমাত্রা অর্ধমাত্রা মাত্রাহীন
স্বরবর্ণ অ আ ই ঈ উ ঊ ঋ এ ঐ* ও ঔ* ৬ ১ ৪
ব্যঞ্জনবর্ণ ক খ গ ঘ ঙ ২ ২ ১
চ ছ জ ঝ ঞ ৪ – ১
ট ঠ ড ঢ ণ ৪ ১ –
ত থ দ ধ ন ৩ ২ –
প ফ ব ভ ম ৪ ১ –
য র ল ৩ – –
শ ষ স হ ৩ ১ –
ড় ঢ় য় ৎ ৩ – ১
ংঃ ঁ – – ৩
মোট স্বরবর্ণ ১১ মোট ব্যঞ্জনবর্ণ ৩৯ মোট বর্ণ ৫০ পূর্ণ, অর্ধ ও মাত্রাহীন বর্ণ ৩২ ৮ ১০
* এই দুটি স্বরধ্বনিকে দ্বিস্বর বা যুগ্ম স্বরধ্বনি বলে। কারণ, এই দুটি মূলত ২টি স্বরধ্বনির মিশ্রণ। যেমন- অ+ই = ঐ, অ+উ = ঔ বা ও+উ = ঔ। অর্থাৎ, বাংলা ভাষায় মৌলিক স্বরধ্বনি মূলত ৯টি।
স্বরবর্ণ অ আ ই ঈ উ ঊ ঋ এ ঐ* ও ঔ* ৬ ১ ৪
ব্যঞ্জনবর্ণ ক খ গ ঘ ঙ ২ ২ ১
চ ছ জ ঝ ঞ ৪ – ১
ট ঠ ড ঢ ণ ৪ ১ –
ত থ দ ধ ন ৩ ২ –
প ফ ব ভ ম ৪ ১ –
য র ল ৩ – –
শ ষ স হ ৩ ১ –
ড় ঢ় য় ৎ ৩ – ১
ংঃ ঁ – – ৩
মোট স্বরবর্ণ ১১ মোট ব্যঞ্জনবর্ণ ৩৯ মোট বর্ণ ৫০ পূর্ণ, অর্ধ ও মাত্রাহীন বর্ণ ৩২ ৮ ১০
* এই দুটি স্বরধ্বনিকে দ্বিস্বর বা যুগ্ম স্বরধ্বনি বলে। কারণ, এই দুটি মূলত ২টি স্বরধ্বনির মিশ্রণ। যেমন- অ+ই = ঐ, অ+উ = ঔ বা ও+উ = ঔ। অর্থাৎ, বাংলা ভাষায় মৌলিক স্বরধ্বনি মূলত ৯টি।
বর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপ; কার ও ফলা
প্রতিটি স্বরবর্ণ ও কিছু কিছু ব্যঞ্জনবর্ণ দুটো রূপে ব্যবহৃত হয়। প্রথমত, স্বাধীনভাবে শব্দের মাঝে ব্যবহৃত হয়। আবার অনেক সময় অন্য কোন বর্ণে যুক্ত হয়ে সংক্ষিপ্ত রূপে বা আশ্রিত রূপেও ব্যবহৃত হয়। যেমন, ‘আ’ বর্ণটি ‘আমার’ শব্দের স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, আবার ‘ম’-র সঙ্গে আশ্রিত হয়ে সংক্ষিপ্ত রূপেও (া ) ব্যবহৃত হয়েছে।
স্বরবর্ণের এই আশ্রিত সংক্ষিপ্ত রূপকে বলে কার, আর ব্যঞ্জনবর্ণের আশ্রিত সংক্ষিপ্ত রূপকে বলে ফলা। উপরে ‘আমার’ শব্দে ‘ম’-র সঙ্গে যুক্ত ‘আ’-র সংক্ষিপ্ত রূপটিকে (া ) বলা হয় আ-কার। এমনিভাবে ই-কার ( w ), ঈ-কার ( x ), উ-কার ( y ), ঊ-কার ( ~ ), ঋ-কার (ৃ ), এ-কার ( † ), ঐ-কার ( ˆ ), ও-কার ( ো), ঔ-কার ৌ) কার। তবে ‘অ’ এর কোন কার নেই।
আবার আম্র শব্দে ‘ম’-র সঙ্গে ‘র’ সংক্ষিপ্ত রূপে বা ফলা যুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ সংক্ষিপ্ত রূপটি (ª ) র-ফলা। এরকম ম-ফলা ( ¨ ), ল-ফলা ( ), ব-ফলা ( ^ ), ইত্যাদি।
No comments:
Post a Comment