Jan 3, 2019

আসুন জেনে নিই, বজ্র নিরোধক দন্ড সম্পর্কে।

বজ্রপাতের উচ্চ মাত্রার বিদ্যুৎ প্রবাহ অনেক সময় ৪০০ কিলো অ্যাম্পিয়ার ছাড়িয়ে যায়। এত উচ্চমাত্রার বিদ্যুৎ প্রবহের ফলে তাপমাত্রা ৫০,০০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ২৭,৭৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে। এই প্রচণ্ড উত্তাপে আগুন ধরে যেতে পারে, মানুষসহ জীবজন্তু মারা যেতে পারে। বাড়িঘরের বৈদ্যুতিক সরঞ্জামও বজ্রপাতের ফলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বজ্রপাত থেকে বাড়ি-ঘর সুরক্ষিত রাখতে যে ব্যবস্থাগুলো নেয়া হয় তার মধ্যে বজ্র নিরোধক দণ্ড অন্যতম।
বজ্র নিরোধক দণ্ড যেভাবে কাজ করেঃ
প্রচলিত একটি ধারণা হচ্ছে বজ্র নিরোধক দণ্ড বজ্রপাত আকর্ষণ করে। আসলে বিষয়টি সেরকম নয়। বজ্র নিরোধক দণ্ড দূর থেকে বজ্র বিদ্যুৎ টেনে আনে না। এটি থাকুক আর নাই থাকুক বজ্র বিদ্যুৎ যেখানে আঘাত করার যেখানেই আঘাত করবে। বজ্র নিরোধক দণ্ডের কাজ হচ্ছে উচ্চমাত্রার বিদ্যুতকে সহজে নিরাপদে মাটিতে পৌঁছানোর সুযোগ করে দেয়া।
তামা, অ্যালুমিনিয়াম প্রভৃতি ধাতুর বৈদ্যুতিক রোধের মাত্রা অনেক কম। তাই সাধারণত এসব ধাতু দিয়েই বজ্র নিরোধক দণ্ড তৈরি করা হয়। মোটামুটিভাবে দুই সেন্টিমিটার ব্যাসের তামা বা অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি ধাতব দণ্ড ভবনের ওপর খাড়াভাবে বসিয়ে দেয়া হয়। আর সেটি এক ইঞ্চি বা কাছাকাছি ব্যাসের পরিবাহী তারের মাধ্যমে ভূমিতে সংযুক্ত রাখা হয়।

প্রবাহের সময় বাধা না পেলে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে পরিবাহী উত্তপ্ত হয় না, ফলে আগুন ধরার ঝুঁকিও থাকে না। বজ্র নিরোধক দণ্ড এ কাজটিই করে দেয়। বজ্র বিদ্যুৎ সরাসরি বজ্র নিরোধক দণ্ডে আঘাত করলে তো সমস্যাই নেই আর কাছাকাছি আঘাত করলেও কম রোধের পথ পাওয়ার কারণে (বজ্র নিরোধক দণ্ডের কারণে) সে বিদ্যুৎ লাফিয়ে বজ্র নিরোধক দণ্ড পর্যন্ত পৌঁছায় এবং সেখান থেকে মাটিতে চলে যায়।
ছাদে লোহার রেলিং থাকলে সেটি কি বজ্র নিরোধক দণ্ডের কাজ করবে? না। লোহার রেলিংকে তামার তারের মাধ্যমে মাটিতে সংযুক্ত করা হয় না তাই এটি বজ্রপাতের বিপদ এড়াতে পারবে না। তাছাড়া বজ্র নিরোধক দণ্ড হিসেবে তামা এবং অ্যালুমিনিয়াম ধাতু লোহার চেয়ে বেশি কার্যকর।
প্রাকৃতিক সুরক্ষাঃ
গ্রামাঞ্চলের ছোট ছোট বাড়ি-ঘরকে সুরক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে তালগাছের মত উঁচু গাছ বেশ কাজে আসে। কাছাকাছি পরিবাহী পদার্থ পাওয়ার কারণে বজ্র বিদ্যুৎ বাড়ি-ঘরের বদলে গাছকে আঘাত করে।
তো আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনা নিয়ে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি।

No comments:

Post a Comment