Sep 18, 2019

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থী ভাই-বোনদের জন্য শেষবারের মত ১০টি প্রয়োজনীয় গাইডলাইন ও প্রয়োজনীয় তথ্য

✔✔ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থী ভাই-বোনদের জন্য শেষবারের মত ১০টি প্রয়োজনীয় গাইডলাইন ও প্রয়োজনীয় তথ্য যা হয়তোবা অনেকেই জানে নাঃ

::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::


[ পোষ্টটা একটু বড় হলেও সবাই অবশ্যই পড়বেন। কারন পোষ্টটি পড়ার পর আপনারা অনেক কিছুই শিখতে/জানতে পারবেন। ]

==================================

(১) পরীক্ষার হলে একটু আগে আগে চলে যাবেন। কারন মূল পরীক্ষা শুরুর প্রায় ৫-১০ মিনিট আগেই পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র প্রদান করা হয়। উত্তরপত্রের নির্দিষ্ট স্থান সতর্কতার সাথে পূরণ করার জন্য এই সময়টা দেওয়া হয়। ধীরে-সুস্থে অন্যদিকে মন না দিয়ে কারও সাথে কথা না বলে fully concentration নিয়ে নির্দিষ্ট উত্তরপত্র পূরণ করবেন। উত্তরপত্র দেওয়ার পর পরীক্ষক আপনাদেরকে বিস্তারিত নিয়ম বুঝিয়ে দিবে কিভাবে পূরণ করবেন। আগে সেসব কথা মন দিয়ে শুনবেন then পূরণ করবেন। আর উত্তরপত্র পূরণে কোন সমস্যা হলে পরীক্ষকের কাছে জিজ্ঞাসা করবেন। পাশের জনের সাথে কথা বলবে না, কারন পরীক্ষকই আপনাকে সঠিক নিয়ম জানাতে পারবে, আপনার পাশের পরীক্ষার্থী আপনার মতই একজন।

.

আর একটা কথা ভাল করে মনে রাখবেন। সেটা হলো, উত্তরপত্রে একটি বাংলা ও একটি ইংরেজী বাক্য লিখতে বলা হবে যেটা পরবর্তীতে ভাইবার সময় হাতের লেখা মিলিয়ে দেখতে ব্যবহৃত হবে। সুতরাং অবশ্যই সেই বাংলা & ইংরেজি বাক্য উত্তরপত্রে লিখবেন। উল্লেখ্য, বাক্য ২টা প্রশ্নেই উল্লেখ থাকবে।

.

[ #বিঃদ্রঃ কার কোথায় কখন কোন বিল্ডিং এ পরীক্ষা হবে মানে সিট প্লান পরীক্ষার ২/১ দিন আগে আপনাদের ফোনে SMS এর মাধ্যমে জানানো হবে। আপনাকে ম্যাসেজ করতে হবে না। ওরাই আপনাকে SMS করে জানিয়ে দিবে। ওয়েবসাইটেও দিবে। আমরাও এই গ্রুপে পোষ্ট দিবো। ]

.

.

(২) আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত কয়েক বছরে রোল নাম্বার অনুসারে সিট প্ল্যান করা হয়নি। যে যার ইচ্ছা মত জায়গায় বসতে পারে। ওয়েট দাড়ান দাড়ান, এটা শুনে এত খুশি হবার কিছু নাই, আগে পুরো কথা শোনোন। প্রতিটা পরীক্ষার হলে পরীক্ষক শিক্ষকবৃন্দ এসে তাঁদের ইচ্ছামত সারি-কলাম চেঞ্জ করে দেন। মানে প্রত্যেক ছাত্রকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় বসিয়ে দেয়। সুতরাং বন্ধুর পাশে বসে দেখাদেখি করে পরীক্ষা দেওয়ার কোন চান্স এখানে নেয়। এরপরও কাউকে তার পাশের জনের সাথে কথা বলতে দেখলে তাকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে পরীক্ষক বদমেজাজী গোত্রের মানুষ হলে উত্তরপত্র নিয়ে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেয়, কিংবা ১৫-২০ মিনিটের জন্য উত্তরপত্র জমা নিয়ে রেখে দেন। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে কারো সাথে কারোর সেট মিলবে না সুতরাং দেখার চান্স নাই।

.

.

(৩) পরীক্ষার হলে ঘড়ি, ক্যালকুলেটর সহ যে কোন ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিষিদ্ধ। তাই এইগুলা নিয়ে যাবেন না।

.

@ by studytour10.blogspot.com 

.

(৪) প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরীক্ষার হলে মনে করে নিয়ে যাবেন। কি কি লাগবে নিচে দেখেনঃ

** SSC অথবা HSC পরীক্ষার মূল রেজিস্ট্রেশন কার্ড।

[ #বিঃদ্রঃ যাদের registration cird অন্য জায়গায় জমা আছে তাঁরা SSC/ HSC registration cird এর সত্যায়িত ফটোকপি এবং যেখানে ভর্তি আছেন মানে যেখানে রেজিস্ট্রেশন কার্ড জমা দেয়া আছে ওখানকার ভর্তির প্রমাণপত্র নিয়ে আসবেন। প্রমাণপত্র বলতে আপনিযে ওখানে ভর্তি আছেন সেটা প্রমাণ করার জন্য যত ডকুমেন্টস আছে আপনার কাছে সব নিয়ে আসবেন। ]

*** ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র ১ কপি (রঙিন হওয়া উত্তম, সাদা-কালোও গ্রহণযোগ্য)

.

.

(৫) যদিও পরীক্ষার হলে টাইমিং অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর তবুও হাত ঘড়ি কেউ নিয়ে যাবেন না। কারন প্রত্যেক পরীক্ষা কেন্দ্রে দেওয়াল ঘড়ি থাকবে।

.

.

(৬) ভার্সিটিতে সিনিয়রদের সামনে ভদ্রভাবে চলবেন। তাঁদের সামনে সিগারেট ধরাবেন না এবং সাবলীলতা বজায় করে চলবেন। তাহলে যেকোনো সিনিয়র ভাই-বোনদের কাছেই আপনারা হেল্প পাবেন এবং অন্য কোন ঝামেলা পোহাতে হবে না।

.

@ by studytour10.blogspot.com

.

(৭) আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল সাধারণত ঐদিন রাতেই দেওয়া হয়। অর্থাৎ আজকে যেই পরীক্ষা দিবেন সেটার রেজাল্ট আজকে রাতের ভিতরেই পেয়ে যাবেন। উল্লেখ্য, যেই ইউনিটগুলোর পরীক্ষা ২দিন মিলে হবে সেগুলোর রেজাল্ট ২য় দিন রাতে পাবেন। যেমন, A ইউনিটের পরীক্ষা ২২ ও ২৩ তারিখ হবে। সুতরাং A ইউনিটের রেজাল্ট ২৩ তারিখ রাতে পাবেন। তবে মাঝে মাঝে কিছুটা বিলম্ব করেও ফলাফল প্রকাশ হতে পারে (সেটা হল ব্যাতিক্রম ক্ষেত্রে)। তবে সাধারণত যেদিনের পরীক্ষার রেজাল্ট সেদিন রাতের মধ্যেই দেওয়া হয়।

.

এক্ষেত্রে আমি সাজেস্ট করবো, আপনারা যারা একাধিক ইউনিটে পরীক্ষা দিবেন তাঁদের ক্ষেত্রে দেখা যাবে হয়তোবা পরপর ২দিন পরীক্ষা। আজকের পরীক্ষা দিয়ে এসে ভয়ে থাকবেন চান্স পাবেন কি না। এর উপর আবার কালকেও এক্সাম। সুতরাং আপনারা আজকের রেজাল্ট না দেখে পরের দিনের পরীক্ষায় attend করতে পারেন, যদি বেশি ভয় লাগে তখন আর কি। কারন by chance যদি রেজাল্ট দেখার পর দেখেন চান্স পান নি তাহলে হয়তোবা পরদিনের পরীক্ষাটা একটা টেনশন নিয়ে দিতে হবে। এতে সেই অতিরিক্ত মানসিক প্রেসার আপনার পরবর্তী পরীক্ষাটাতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যাই হোক, পরীক্ষার দিবেন একদম ঠান্ডা মাথায়, কোনো প্রকার মানসিক প্রেসার বা দুশ্চিন্তা তখন সাথে রাখবেন না।

.

.

(৮) পরীক্ষার হলে যে যত বেশী ঠান্ডা মাথায় থেকে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে মনোনিবেশ করতে পারবে সে তত বেশি সফল হবে। এই কারনেই অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীও ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পায় না। আবার কেউ অনেক কম পড়েও পরীক্ষার হলে মাথা ঠান্ডা রেখে চেষ্টা করতে পারলে সফল হয়। আপনি কতটা জানেন সেটা বড় ব্যাপার না, বড় ব্যাপার হল আপনি পরীক্ষার হলে কতটা দিতে পারছেন। এছাড়া সবগুলো প্রশ্নকে সহজভাবে চিন্তা করে সমাধানের চেষ্টা করবেন। ইনশাল্লাহ সাফল্য আপনার সুনিশ্চিত।

.

.

(৯) বিষয়ভিত্তিক আলাদা আলাদা পাশ করতে হবে না। সব মিলিয়ে ৩৩% মার্ক পেলেই পাস (without GPA) মানে ৮০ এর মধ্যে ২৬.৪ পেলেই পাশ। পাশ করলেই চান্স পাবেন এটা ভাববেন না। কারন জাবিতে চান্স পেতে জিপিএ সহ মিনিমাম ৬৫-৭২% মার্ক লাগে। আর ভাল সাবজেক্ট পেতে জিপিএ সহ মিনিমাম ৭৫%+ মার্ক লাগে।

.

নেগেটিভ মার্কিং এর দিকেও নজর রাখবেন। পরীক্ষার সর্বমোট নাম্বার থেকে প্রতি ভুল উত্তরের জন্য ০.২০ নাম্বার কর্তন হবে। তারমানে একটা উত্তর ভুল দাগালে তো ১.২০ নাম্বার শেষ।

.

(১০) পরীক্ষার হলে মোবাইল সহ যে কোনো ইলেকট্রনিকস ডিভাইস রাখা দন্ডনীয় অপরাধ। যারা দূর দূরান্ত থেকে আসবেন তাঁদের সাথে মোবাইল রাখা অতি জরুরী। মোবাইল পরীক্ষার হলে নিয়ে ঢুকবেন ঠিকই, কিন্তু স্যারদের পরামর্শ অনুযায়ী মোবাইলগুলো (মোবাইল সহ ব্যাগ/হ্যান্ডব্যাগ) স্যারদের সামনে নির্দিষ্ট জায়গায় জমা দিয়ে সিটে বসবেন। এছাড়া পরীক্ষার হলের সামনে টাকার বিনিময়ে মোবাইল ব্যাগ রাখার মত ব্যবস্থা থাকবে সেখানে রাখতে পারেন, কারন অনেক সময় মোবাইল নিয়ে ঢুকতেই দেয়না পরীক্ষার হলে। সেক্ষেত্রে টাকার বিনিময়ে বাইরে রাখা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।

.

★ আজ এ পর্যন্তই। সবার জন্য শুভকামনা।

No comments:

Post a Comment