Apr 2, 2019

**Hsc বাংলা ২য় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর

**Hsc বাংলা ২য় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর
**Hsc বাংলা ২য় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর

১। বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের ৫টি নিয়ম লেখো।
অথবা, আধুনিক বাংলা বানানের পাঁচটি নিয়ম লেখো।
উত্তর : বাংলা একাডেমি প্রণীত বাংলা বানানের পাঁচটি নিয়ম নিম্নরূপ :
ক. যেসব শব্দে ই, ঈ বা উ, ঊ উভয় শুদ্ধ কেবল সেসব শব্দে ই বা উ এবং কার চিহ্ন িবা ু হবে। যেমনপল্লী, ধরণি, শ্রেণি, সূচিপত্র, রচনাবলি ইত্যাদি।
খ. রেফের পর ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব হবে না। যেমনঅর্জন, কর্ম, কার্য, সূর্য ইত্যাদি।
গ. সন্ধির ক্ষেত্রে ক খ গ ঘ পরে থাকলে পূর্ব পদের অন্তস্থিত ম স্থানে ং হবে। যেমনঅহম্ + কার = অহংকার, সম্ + গীত = সংগীত ইত্যাদি।
ঘ. শব্দের শেষে বিগর্স (ঃ) থাকবে না। যেমনকার্যত, প্রথমত, প্রধানত, প্রায়শ, মূলত ইত্যাদি।
ঙ. সব অতৎসম অর্থাৎ তদ্ভব, দেশি, বিদেশি, মিশ্র শব্দে কেবল ই, ঊ এবং এদের কারচিহ্ন ি বা ু ব্যবহার হবে। যেমনআরবি, আসামি, ইংরেজি, বাঙালি, সরকারি, চুন ইত্যাদি।

২। ণত্ব বিধান কী? ণত্ব বিধানের সূত্রগুলো লেখো।
বা, ণত্ব বিধান কী? উদাহরণসহ ণত্ব বিধানের পাঁচটি নিয়ম লেখো।
উত্তর : যে রীতি অনুসারে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত তৎসম বা সংস্কৃত শব্দের বানানে মূর্ধন্য (ণ) হয়, তাকে ণত্ব বিধান বলে। অর্থাৎ তৎসম শব্দের বানানে ণ-এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ণত্ব বিধান।
ক. তৎসম শব্দের বানানে ঋ, র এবং ষ এর পরে ণ ব্যবহৃত হয়। যেমনচরণ, মরণ, ঋণ, তৃণ, ক্ষীণ, জীর্ণ।
খ. যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের ক্ষেত্রে ট-বর্গীয় বর্ণের পূর্বে ণ বসে। যেমনবণ্টন, লুণ্ঠন, কণ্ঠ, খণ্ড, ভণ্ড, মুণ্ড, কুণ্ড।
গ. প্র, পরি, নির এই তিনটি উপসর্গের পর সাধারণত ণ ব্যবহৃত হয়। যেমনপ্রণয়, প্রণাম, পরিণয়, নির্ণয়।
ঘ. নার, পার, রাম, রবীন্দ্র, চন্দ্র, উত্তর ইত্যাদি শব্দের পর অয়ন বা আয়ন থাকলে তার পরের ন ধ্বনিটি ণ হয়। যেমননারায়ণ, পরায়ণ, রামায়ণ, রবীন্দ্রায়ণ, চন্দ্রায়ণ, উত্তরায়ণ ইত্যাদি।
ঙ. র, ঋ, রেফ (র্ ), ঋ-কার ( ূ), র-ফলা ( ্র)- এর পর ধ্বনি ক-বর্গ, প-বর্গ এবং য, য়, হ, ং থাকে, তবে তার পরে ণ হবে। যেমনশ্রাবণ, অর্ণব, গ্রহণ, দ্রবণ।

৩। প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম অনুযায়ী ণ-ত্ব ও য-ত্ব বিধানের ব্যতিক্রম নিয়মগুলোর মধ্যে পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখো।
উত্তর : প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম অনুযায়ী ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধানের ব্যতিক্রম ৫টি নিয়ম হলো :
ক. সমাসবদ্ধ পদে দুই পদের পূর্ব পদে ঋ র ষ থাকলেও পরপদে দন্ত্য ন মূর্ধন্য ণ হয় না। যেমনত্রিনয়ন, ত্রিনেত্র, সর্বনাম, দুর্নীতি, দুর্নাম, দুর্নিবার ইত্যাদি।
খ. ত-বর্গীয় বর্ণের সঙ্গে যুক্ত ন কখনো ণ হয় না, ন হয়। যেমনঅন্ত, গ্রন্থ, ক্রন্দন ইত্যাদি।
গ. বাংলা ক্রিয়াপদের আন্তঃস্থিত ন ণ হয় না।
যেমনহবেন, মারেন, যাবেন, করেন, খাবেন ইত্যাদি।
ঘ. আরবি, ফারসি, ইংরেজি ইত্যাদি বিদেশি ভাষা থেকে আসা শব্দে ষ হয় না। যেমনজিনিস, পোশাক, মাস্টার, পোস্ট ইত্যাদি।
ঙ. সংস্কৃত সাৎ প্রত্যয়যুক্ত পদেও ষ হয় না। যেমনঅদ্বিসাৎ, ধূলিসাৎ, ভূমিসাৎ ইত্যাদি।

৪। বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম অনুসারে তৎসম শব্দের যেকোনো ৫টি নিয়ম লেখো।
উত্তর : প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম অনুসারে তৎসম শব্দের ৫টি নিয়ম দেওয়া হলো :
ক. এই নিয়মে বর্ণিত ব্যতিক্রম ছাড়া তৎসম বা সংস্কৃত শব্দের নির্দিষ্ট বানান অপরিবর্তিত থাকবে।
খ. যেসব তৎসম শব্দে ই, ঈ, উ, ঊ উভয় শুদ্ধ। কেবল যেসব শব্দে ই বা উ এবং তার কারচিহ্ন ি ু হবে। যেমনতরণি, ধমনি, ধরণি, নাড়ি, পাঞ্জি, পলি ইত্যাদি।
গ. রেফের পর ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব হবে না। যেমনঅর্জ্জন, ঊর্ধ্ব, কর্ম্ম, কার্ত্তিক, কার্য্য ইত্যাদি।
ঘ. সন্ধির ক্ষেত্রে ক খ গ ঘ পরে থাকলে পূর্ব পদের অন্তস্থিত ম্ স্থানে অনুস্বার (ং) হবে। যেমনঅহংকার, ভয়ংকর, সংগীত, সংঘটন, শুভংকর ইত্যাদি।
ঙ. সংস্কৃত ইন্ প্রত্যায়ান্ত শব্দের দীর্ঘ ঈ-কারান্ত রূপ সমাসবদ্ধ হলে সংস্কৃত ব্যাকরণের নিয়ম অনুযায়ী সেগুলোতে হ্রস্ব ই-কার হয়। যেমনগুণী-গুণিজন, প্রাণী-প্রাণিবিদ্যা, মন্ত্রী-মন্ত্রিপরিষদ ইত্যাদি।

৫। বাংলা একাডেমি প্রণীত বাংলা বানানের নিয়ম অনুসারে অ-তৎসম শব্দের বানানের পাঁচটি নিয়ম লেখো।
উত্তর : বাংলা বানানের নিয়ম অনুসারে অ-তৎসম শব্দের পাঁচটি নিয়ম নিম্নরূপ :
ক. অ-তৎসম শব্দের বানানে ণ ব্যবহার করা হবে না। যেমনঅঘ্রাণ, ইরান, কান, কোরান, গভর্নর ইত্যাদি।
খ. বিদেশি শব্দের ক্ষেত্রে ষ ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। যেমনকিশমিশ, নাশতা, পোশাক, বেহেশত, শখ ইত্যাদি।
গ. বাংলায় বিদেশি শব্দের আদিতে বর্ণবিশেষ সম্ভব নয়। এগুলো যুক্তবর্ণ দিয়ে লিখতে হবে। যেমনস্টেশন, স্ট্রিট, স্প্রিং ইত্যাদি।
ঘ. হস-চিহ্ন যথাসম্ভব বর্জন করা হবে। যেমনকলকল, করলেন, কাত, চট, জজ, ঝরঝর ইত্যাদি।
ঙ. ঊর্ধ্ব কমা যথাসম্ভব বর্জন করা হবে। যেমনবলে, হয়ে, দুজন, চাল ইত্যাদি।

৬। বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম অনুযায়ী শ, ষ, স সম্পর্কিত বানানের ৫টি নিয়ম লেখো।
উত্তর : নিম্নে বাংলা শব্দে শ, ষ, স-এর ব্যবহারের পাঁচটি নিয়ম লেখা হলো :
ক. ইংরেজি ও ইংরেজির মাধ্যমে আসা বিদেশি sh. tion. ssion প্রভৃতি বর্ণগুচ্ছ বা ধ্বনির জন্য শ ব্যবহৃত হবে। যেমনসেশন, স্টেশন।
খ. বিদেশি শব্দের উচ্চারণে ং ধ্বনির ক্ষেত্রে স ব্যবহৃত হবে। যেমন-ক্লাস, অফিস।
গ. বিদেশি শব্দের ক্ষেত্রে ষ ব্যবহৃত হয় না। যেমনস্মার্ট, পোশাক।
ঘ. ঋ-কারের পরে মূর্ধন্য ষ হয়। যেমনঋষি, ঋষভ।
ঙ. ট-বর্গীয় ধ্বনির পূর্বে মূর্ধন্য ষ যুক্ত হয়। যেমনকষ্ট, নষ্ট, কাষ্ঠ।

৭। ষ-ত্ব বিধান কী? ষ-ত্ব বিধানের পাঁচটি নিয়ম লেখো।
উত্তর : যে রীতি অনুসারে তৎসম শব্দের বানানে মূর্ধন্য ষ ব্যবহৃত হয়, তাকে ষ-ত্ব বিধান বলে। অর্থাৎ তৎসম শব্দের বানানে ষ-এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ষত্ব বিধান।
নিচে ষ-ত্ব বিধানের পাঁচটি নিয়ম উল্লেখ করা হলো :
ক. তৎসম শব্দের বানানে র, ঋণ বা ঋ-কারের ( ৎ) পর মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমনঋষি, কৃষি, মহর্ষি।
খ. অ, আ ভিন্ন অন্য স্বরধ্বনি এবং ক ও র-এর পরে স থাকলে তা ষ হয়। যেমনভবিষ্যৎ, মুমূর্ষু, ঊষা ইত্যাদি।
গ. ট, ঠ এই দুটি মূর্ধন্য বর্ণের পূর্বে সর্বদা ষ হয়। যেমনকষ্ট, নষ্ট, দুষ্ট, কাষ্ঠ, ওষ্ঠ, শ্রেষ্ঠ।
ঘ. ক, খ, প, ফএসব বর্ণের আগে ইঃ (ঃি বা উঃ ু ঃ) থাকলে সন্ধির বিসর্গের জায়গায় সর্বদা মূর্ধন্য-ষ বসবে। যেমনপরি+কার = পরিষ্কার, আবিঃ + কার = আবিষ্কার, নিঃ + পাপ = নিষ্পাপ, দুঃ+কর = দুষ্কর, চতুঃ + পদ = চতুষ্পদ।
ঙ. ই-কারান্ত ও উ-কারান্ত উপসর্গের পর কতকগুলো ধাতুতে ষ হয়। যেমনঅভিষেক, পরিষদ, অনুষঙ্গ, অনুষ্ঠান।

৮। বাংলা বানান ই-কার ()ি ব্যবহারের পাঁচটি নিয়ম উদারহণসহ লেখো।
উত্তর : বাংলা বানানে ই-কার ব্যবহারের পাঁচটি নিয়ম নিচে দেওয়া হলো :
ক. যেসব তৎসম শব্দে ই, ঈ-কার শুদ্ধ সেসব শব্দে ই-কার হবে। যেমনচুল্লি, তরণি, পদবি, নাড়ি, মমি, ভঙ্গি ইত্যাদি।
খ. সব অ-তৎসম শব্দে ই-কার ব্যবহৃত হবে। যেমনখুশি, পাখি, শাড়ি ইত্যাদি।
ঘ. বিশেষণবাচক আলি প্রত্যয়যুক্ত শব্দে ই-কার হবে। যেমনবর্ণালি, গীতালি, সোনালি, রূপালি ইত্যাদি।
ঙ. পদাশ্রিত নির্দেশক হলে ই-কার বসবে। যেমনছেলেটি, বইটি, কলমটি, মেয়েটি ইত্যাদি।

৯। বাংলা বানানে উ-কার ব্যবহারের পাঁচটি নিয়ম লেখো।
উত্তর :
ক. অ-তৎসম শব্দে উ-কার বসবে। যেমনকুমির, খুশি, টুপি, বুড়ি ইত্যাদি।
খ. মূল সংস্কৃত শব্দে উ-কার থাকলে তদ্ভব শব্দে উ-কার হবে। যেমনপূজা-পুজো, পূর্ব-পুব ইত্যাদি।
গ. বিদেশি শব্দে উ-কার ব্যবহৃত হবে। যেমনকুর্দি, সুন্নি, কুরআন ইত্যাদি।
ঘ. ক্রিয়াবাচক শব্দে উ-কার হয়। যেমনআসুন, করুন, ঘুরা, বসুন, ভাবুন ইত্যাদি।
ঙ. প্রত্যয়ান্ত শব্দযোগে উ-কার হয়। যেমনপটুয়া, রাঁধুনি, হাতুড়ে, পিসতুতো ইত্যাদি।

১০। বাংলা বানানে আ-কার (া) ব্যবহারের উল্লেখযোগ্য নিয়মগুলো লেখো।
উত্তর : বাংলা বানানে আ-কার ব্যবহারের উল্লেখযোগ্য নিয়মগুলো নিম্নরূপ :
ক. অ-কার বা আ-কারের পর অ-কার থাকলে উভয়ে মিলে আ-কার হয়। যেমনহিম + আলয় = হিমালয়, সিংহ + আসন = সিংহাসন ইত্যাদি।
খ. আ-কারের পর ই-কার বা ঈ-কার থাকলে উভয়ে মিলে এ কার হয়। যেমনমহা+ ঈশ= মহেশ।
গ. আ-কারের পর উ-কার বা ঊ-কার থাকলে উভয়ে মিলে ও-কার হয়। যেমনগঙ্গা + ঊর্মি = গঙ্গোর্মি।

No comments:

Post a Comment